দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র কি? কেন এবং কিভাবে এটি ভাঙে? বিস্তারিত জানুন
আচ্ছালামু আলাইকুম প্রিয় দর্শক - দৈনিক শিক্ষা ব্লগর পক্ষ থেকে আপনাকে স্বাগতম। আজকে আমি আপনাদের মাঝে দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র কি? কেন এবং কিভাবে এটি ভাঙে? বিস্তারিত জানুন নিয়ে আলোচনা করব।
ভূমিকা: দারিদ্র্য কেন কমে না?
দারিদ্র্য – এই শব্দটা শুনলেই আমাদের চোখে ভেসে ওঠে অভাব, কষ্ট আর দুঃখের ছবি। পৃথিবীর সব দেশেই কমবেশি দরিদ্র মানুষ আছেন। কেউ হয়তো ঠিকমতো খেতে পায় না, কারো থাকার ভালো জায়গা নেই, আবার কেউ হয়তো টাকার অভাবে ছেলেমেয়েকে স্কুলে পাঠাতে পারে না। এই দরিদ্র বা দারিদ্র্য শুধু একজন মানুষের বা একটা পরিবারের সমস্যা নয়, এটা পুরো সমাজের, পুরো দেশের একটা বড় সমস্যা।
আমরা প্রায়ই দেখি, দরিদ্র মানুষগুলো যেন আরো দরিদ্র হতে থাকে। তাদের অবস্থা সহজে ভালো হয় না। মনে হয় যেন তারা একটা অদৃশ্য চক্রের মধ্যে আটকে গেছে, যেখান থেকে বের হওয়া খুব কঠিন। এই আটকে পড়া অবস্থাকেই অর্থনীতিবিদরা বলেন "দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র"। আজকের লেখায় আমরা এই দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র জিনিসটা কী, কেন এটা তৈরি হয়, আর কীভাবে এই চক্র থেকে বের হওয়া যেতে পারে – এই বিষয়গুলো সহজ ভাষায় জানার চেষ্টা করবো।
দারিদ্র্য আসলে কী?
দুষ্টচক্র বোঝার আগে, চলো একটু জেনে নিই দারিদ্র্য বলতে আসলে কী বোঝায়। সহজ কথায়, দারিদ্র্য মানে হলো জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোর অভাব থাকা। এই প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো হতে পারে:
- পর্যাপ্ত খাবার
- পরিষ্কার পানি
- থাকার জন্য নিরাপদ বাসস্থান
- পরার জন্য কাপড়
- অসুখ হলে চিকিৎসা পাওয়ার সুযোগ
- লেখাপড়া করার সুযোগ
- কাজ করে আয় করার সুযোগ
যার জীবনে এই মৌলিক জিনিসগুলোর অভাব থাকে, তাকেই আমরা দরিদ্র বলি। এই অভাব যত বেশি, দারিদ্র্যও তত গভীর।
দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র জিনিসটা কী?
এবার আসি মূল কথায় – দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র। এটা হলো এমন একটা অবস্থা বা চক্র, যেখানে দারিদ্র্য নিজেই আরো দারিদ্র্য তৈরি করে। ব্যাপারটা অনেকটা ঘূর্ণি পানির মতো, একবার পড়লে সহজে বের হওয়া যায় না, বরং আরো গভীরে টেনে নিয়ে যায়।
একজন বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ, অধ্যাপক রাগনার নারকস (Ragnar Nurkse), এই ধারণাটি খুব সহজভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেছিলেন, "A country is poor because it is poor." অর্থাৎ, "একটি দেশ গরীব, কারণ সে গরীব।" কথাটা শুনতে অদ্ভুত লাগলেও এর মানে হলো, গরীব হওয়ার কারণেই এমন কিছু সমস্যা তৈরি হয় যা দেশটাকে বা মানুষটাকে গরীবই রেখে দেয়, উন্নতি করতে দেয় না।
একটু ভেঙে বললে, দারিদ্র্যের কারণে মানুষ যেসব সমস্যার মধ্যে পড়ে, সেই সমস্যাগুলোই আবার দারিদ্র্যকে বাড়িয়ে তোলে। ফলে দারিদ্র্য থেকে বের হওয়ার পথটা বন্ধ হয়ে যায় বা খুব কঠিন হয়ে পড়ে। এটা একটা চক্রের মতো চলতেই থাকে।

কীভাবে এই দুষ্টচক্র কাজ করে?
দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র বোঝার জন্য আমাদের কয়েকটা ধাপ দেখতে হবে। এই ধাপগুলো একে অপরের সাথে যুক্ত এবং চক্রাকারে ঘুরতে থাকে। চলো দেখি ধাপগুলো কী কী:
১. কম আয়
চক্রের শুরুটা হয় সাধারণত কম আয় দিয়ে। দরিদ্র মানুষের আয় খুব কম থাকে। তারা হয়তো দিনমজুরের কাজ করে, রিকশা চালায়, বা ছোটখাটো কোনো কাজ করে যা থেকে খুব বেশি টাকা আসে না। আয় কম হওয়ার কারণে তারা তাদের মৌলিক চাহিদাগুলোই ঠিকমতো পূরণ করতে পারে না।
২. কম সঞ্চয় ও কম ভোগ
আয় যখন কম থাকে, তখন সংসার চালাতেই সব টাকা শেষ হয়ে যায়। ভবিষ্যতের জন্য টাকা জমানো বা সঞ্চয় করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এমনকি, অনেক সময় ঠিকমতো খাবার, পোশাক বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসও তারা কিনতে পারে না। অর্থাৎ তাদের জিনিসপত্র কেনার ক্ষমতা বা 'ভোগ' কম থাকে।
৩. কম পুষ্টি ও স্বাস্থ্য
টাকার অভাবে দরিদ্র মানুষরা পুষ্টিকর খাবার কিনতে পারে না। ফলে তারা অপুষ্টিতে ভোগে এবং সহজেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। অসুস্থ হলে ভালো ডাক্তার দেখানো বা ওষুধ কেনার সামর্থ্যও তাদের থাকে না। শরীর খারাপ থাকলে তারা কাজ করতে পারে না, ফলে আয় আরো কমে যায়।
৪. শিক্ষার অভাব
দরিদ্র বাবা-মায়েরা টাকার অভাবে ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে পারেন না। অনেক সময় ছোটবেলাতেই শিশুদের কাজে লেগে যেতে হয় পরিবারকে সাহায্য করার জন্য। লেখাপড়া শিখতে না পারার কারণে বড় হয়ে তারা ভালো কোনো চাকরি পায় না বা বেশি আয়ের কাজ করতে পারে না। ফলে তারাও গরীবই থেকে যায়।
৫. কম মূলধন গঠন
যেহেতু মানুষের হাতে টাকা নেই, সঞ্চয় নেই, তাই তারা নিজেরা কোনো ব্যবসা শুরু করতে পারে না বা কোনো কিছুতে বিনিয়োগ করতে পারে না। ভালো যন্ত্রপাতি, প্রযুক্তি বা উন্নত চাষাবাদের সরঞ্জাম কেনার সামর্থ্য তাদের থাকে না। ব্যক্তিগত পর্যায়ে যেমন মূলধন তৈরি হয় না, তেমনি দেশের সামগ্রিক মূলধনও কম থাকে।
৬. কম বিনিয়োগ
যখন মানুষের কেনার ক্ষমতা কম থাকে (কম ভোগ), তখন বাজারে জিনিসপত্রের চাহিদা কম থাকে। চাহিদা কম থাকলে ব্যবসায়ীরা নতুন করে জিনিসপত্র তৈরি করতে বা ব্যবসায় টাকা খাটাতে (বিনিয়োগ করতে) সাহস পায় না। কারণ জিনিস বিক্রি না হলে তাদের লোকসান হবে। ফলে নতুন কলকারখানা তৈরি হয় না, নতুন ব্যবসার সুযোগ তৈরি হয় না।
৭. কম উৎপাদন ও কর্মসংস্থান
বিনিয়োগ কম হলে দেশে জিনিসপত্র উৎপাদনও কম হয়। নতুন কলকারখানা বা ব্যবসা তৈরি না হওয়ায় মানুষের জন্য নতুন কাজের সুযোগ বা কর্মসংস্থানও তৈরি হয় না। ফলে বেকারত্ব বাড়ে অথবা মানুষ কম আয়ের কাজেই যুক্ত থাকতে বাধ্য হয়।
৮. চক্রের পুনরাবৃত্তি
কম উৎপাদন এবং কম কর্মসংস্থানের ফলে মানুষের আয় আবার কম হয় (ধাপ ১)। আর এভাবেই চক্রটা ঘুরতে থাকে – কম আয় থেকে কম সঞ্চয়, কম ভোগ, খারাপ স্বাস্থ্য, শিক্ষার অভাব, কম মূলধন, কম বিনিয়োগ, কম উৎপাদন, এবং আবার কম আয়। এই চক্রের মধ্যে একবার ঢুকে পড়লে তা থেকে বের হওয়া খুব কঠিন হয়ে পড়ে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে এই দারিদ্র্য চলতেই থাকে।
দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র কেন তৈরি হয়? এর কারণগুলো কী কী?
কোনো একটা নির্দিষ্ট কারণে এই দুষ্টচক্র তৈরি হয় না। অনেকগুলো কারণ একসাথে মিলে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। কিছু প্রধান কারণ হলো:
- ঐতিহাসিক কারণ: অনেক দেশ অতীতে শোষণ বা বৈষম্যের শিকার হয়েছে, যা তাদের অর্থনৈতিক ভিত্তিকে দুর্বল করে দিয়েছে।
- শিক্ষার অভাব: শিক্ষার সুযোগ না থাকায় মানুষ ভালো চাকরি বা আয়ের পথ খুঁজে পায় না।
- স্বাস্থ্যসেবার অভাব: ভালো চিকিৎসার সুযোগ না থাকায় অসুস্থতা মানুষকে কর্মহীন করে ফেলে এবং চিকিৎসার খরচ পরিবারকে আরো গরীব বানিয়ে দেয়।
- বেকারত্ব ও নিম্ন মজুরি: কাজের সুযোগ কম থাকা এবং যা কাজ পাওয়া যায়, তার বেতন খুব কম হওয়া।
- সম্পদের অসম বণ্টন: দেশের বেশিরভাগ সম্পদ অল্প কিছু মানুষের হাতে থাকা, আর গরিবদের কিছুই না থাকা।
- প্রাকৃতিক দুর্যোগ: বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড়ের মতো দুর্যোগ দরিদ্র মানুষের ঘরবাড়ি, ফসল নষ্ট করে তাদের আরো অসহায় করে তোলে।
- অবকাঠামোর অভাব: ভালো রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ, বাজারের ব্যবস্থা না থাকায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হয়।
- সামাজিক বৈষম্য: জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ বা অন্য কোনো কারণে কারো প্রতি বৈষম্য করা হলে তারা সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়।
- প্রযুক্তির অভাব: আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে না পারায় উৎপাদনশীলতা কম থাকে।
- দুর্নীতি: দুর্নীতি দেশের উন্নয়নের টাকা আত্মসাৎ করে ফেলে, ফলে দরিদ্র মানুষের কাছে সুযোগ পৌঁছায় না।
দারিদ্র্যের দুষ্টচক্রের প্রভাব কী?
এই দুষ্টচক্রের প্রভাব খুবই মারাত্মক এবং সুদূরপ্রসারী। এর ফলে:
- ব্যক্তি ও পরিবার: মানুষ অপুষ্টি, অসুস্থতা, অশিক্ষা আর হতাশায় ভোগে। পারিবারিক অশান্তি বাড়ে।
- সমাজ: সমাজে অপরাধ প্রবণতা (চুরি, ডাকাতি) বাড়ে। সামাজিক অস্থিরতা দেখা দেয়। শিশুশ্রম, বাল্যবিবাহের মতো সমস্যা বাড়ে।
- অর্থনীতি: দেশের সামগ্রিক উৎপাদন কমে যায়, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়। দেশ আন্তর্জাতিকভাবে পিছিয়ে পড়ে।
- মানবসম্পদ: শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের অভাবে দেশের মানুষ দক্ষ হয়ে উঠতে পারে না, যা দেশের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়ায়।
এই দুষ্টচক্র কি ভাঙা সম্ভব? কীভাবে?
যদিও দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র খুব শক্তিশালী, তবুও এটা ভাঙা অসম্ভব নয়। এর জন্য দরকার সমন্বিত এবং দীর্ঘমেয়াদী প্রচেষ্টা। কিছু প্রধান উপায় হলো:
১. শিক্ষা ও দক্ষতার উন্নয়ন:
সবাইকে, বিশেষ করে দরিদ্র ছেলেমেয়েদের জন্য মানসম্মত শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। কারিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মানুষকে দক্ষ করে তুলতে হবে, যাতে তারা ভালো আয়ের কাজ পেতে পারে।
২. স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি:
দরিদ্র মানুষের জন্য বিনামূল্যে বা কম খরচে ভালো চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। পুষ্টি বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে এবং প্রয়োজনে পুষ্টিকর খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে।
৩. কর্মসংস্থান সৃষ্টি:
নতুন নতুন কলকারখানা স্থাপন, ব্যবসার সুযোগ তৈরি এবং কৃষি খাতের আধুনিকায়নের মাধ্যমে মানুষের জন্য কাজের সুযোগ বাড়াতে হবে। গ্রামীণ এলাকায় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের প্রসারে সাহায্য করতে হবে।
৪. সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি:
বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, বেকার ভাতা, অতি দরিদ্রদের জন্য খাদ্য সহায়তা ইত্যাদি কর্মসূচির মাধ্যমে দরিদ্র ও অসহায় মানুষদের সরাসরি সাহায্য করা।
৫. ক্ষুদ্রঋণ ও আর্থিক সহায়তা:
দরিদ্র মানুষদের ছোট ব্যবসা শুরু করার জন্য সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করা, যাতে তারা নিজেরাই আয়ের পথ তৈরি করতে পারে।
৬. অবকাঠামোগত উন্নয়ন:
রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ, সেচ ব্যবস্থা, বাজার ইত্যাদির উন্নতি ঘটাতে হবে, যাতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সহজ হয়।
৭. নারীর ক্ষমতায়ন:
নারীদের শিক্ষা ও কাজের সুযোগ দিলে তারা পরিবার ও দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারে, যা দারিদ্র্য কমাতে সাহায্য করে।
৮. দুর্নীতি দমন:
সরকারকে কঠোর হাতে দুর্নীতি দমন করতে হবে, যাতে উন্নয়নের সুফল দরিদ্র মানুষের কাছে পৌঁছায়।
৯. সম্পদের সুষম বণ্টন:
দেশের সম্পদ যেন শুধু কিছু মানুষের হাতে কুক্ষিগত না থেকে সবার মধ্যে ন্যায্যভাবে বণ্টিত হয়, সেদিকে নজর দিতে হবে।
১০. সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা:
শুধু সরকার নয়, বেসরকারি সংস্থা (এনজিও), ব্যবসায়ী সমাজ এবং সাধারণ মানুষ – সবাইকে একসাথে এগিয়ে আসতে হবে। একে অপরের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হবে এবং সাধ্যমতো সাহায্য করতে হবে।
আমাদের করণীয় কী?
ছাত্র হিসেবে বা সাধারণ নাগরিক হিসেবেও আমাদের কিছু করার আছে। আমরা দারিদ্র্যের কারণ ও এর প্রভাব সম্পর্কে জানতে পারি, অন্যদের জানাতে পারি। আমাদের আশেপাশে থাকা দরিদ্র মানুষদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে পারি, তাদের ছোটখাটো সাহায্য করতে পারি। পড়ালেখা শেষ করে আমরা নিজেরা এমন কিছু করতে পারি যা দেশের দারিদ্র্য কমাতে সাহায্য করবে। সবচেয়ে বড় কথা হলো, এই সমস্যা সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং বিশ্বাস রাখা যে চেষ্টা করলে এই দুষ্টচক্র ভাঙা সম্ভব।
উপসংহার: আশার আলো
দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র একটি জটিল এবং কঠিন সমস্যা, কিন্তু হতাশ হওয়ার কিছু নেই। পৃথিবীর অনেক দেশ একসময় অত্যন্ত দরিদ্র ছিল, কিন্তু সঠিক পরিকল্পনা ও প্রচেষ্টার মাধ্যমে তারা আজ উন্নত। বাংলাদেশও দারিদ্র্য দূরীকরণে অনেক সাফল্য অর্জন করেছে। শিক্ষার হার বাড়ছে, স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি হচ্ছে, মানুষের আয় বাড়ছে। হ্যাঁ, এখনো অনেক পথ বাকি, কিন্তু আমরা যদি সবাই মিলে চেষ্টা করি – সরকার, জনগণ, বিভিন্ন সংস্থা – তাহলে অবশ্যই এই দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র ভেঙে এক সুন্দর ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়া সম্ভব। প্রয়োজন শুধু সদিচ্ছা, সঠিক পরিকল্পনা এবং নিরন্তর প্রচেষ্টা।
সাধারণ জিজ্ঞাসা (FAQs)
প্রশ্ন ১: দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র মানে কী?
উত্তর: দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে দারিদ্র্য নিজেই আরো দারিদ্র্য তৈরি করে। কম আয় থেকে শুরু করে কম সঞ্চয়, খারাপ স্বাস্থ্য, শিক্ষার অভাব, কম বিনিয়োগ, কম উৎপাদন ইত্যাদি সমস্যাগুলো চক্রাকারে ঘুরতে থাকে এবং মানুষকে গরীব করেই রাখে।
প্রশ্ন ২: দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র ধারণাটি কে প্রথম দেন?
উত্তর: অধ্যাপক রাগনার নারকস (Ragnar Nurkse) দারিদ্র্যের দুষ্টচক্রের ধারণাটি জনপ্রিয় করেন। তার বিখ্যাত উক্তি হলো "একটি দেশ গরীব, কারণ সে গরীব।"
প্রশ্ন ৩: কেন এই দুষ্টচক্র তৈরি হয়?
উত্তর: এর পেছনে অনেক কারণ আছে, যেমন – শিক্ষার অভাব, স্বাস্থ্যসেবার অভাব, বেকারত্ব, সম্পদের অসম বণ্টন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, দুর্নীতি, অবকাঠামোর অভাব ইত্যাদি।
প্রশ্ন ৪: দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র ভাঙার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপায় কী?
উত্তর: কোনো একটি উপায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলা কঠিন, কারণ এটি একটি জটিল সমস্যা। তবে শিক্ষা ও দক্ষতার উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি – এই তিনটি বিষয়কে প্রায়শই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।
প্রশ্ন ৫: সাধারণ মানুষ কীভাবে দারিদ্র্য কমাতে সাহায্য করতে পারে?
উত্তর: সাধারণ মানুষ সচেতনতা বৃদ্ধি করে, দরিদ্র মানুষদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে, সাধ্যমতো সাহায্য করে এবং সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে সামিল হয়ে দারিদ্র্য কমাতে ভূমিকা রাখতে পারে।
আপনার আসলেই দৈনিক শিক্ষা ব্লগর একজন মূল্যবান পাঠক। দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র কি? কেন এবং কিভাবে এটি ভাঙে? বিস্তারিত জানুন এর আর্টিকেলটি সম্পন্ন পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ ধন্যবাদ। এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনার কেমন লেগেছে তা অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।
দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন - অন্যথায় আপনার মন্তব্য গ্রহণ করা হবে না।
comment url