বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা কর

আচ্ছালামু আলাইকুম প্রিয় দর্শক - দৈনিক শিক্ষা ব্লগর পক্ষ থেকে আপনাকে স্বাগতম। আজকে আমি আপনাদের মাঝে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা কর নিয়ে আলোচনা করব।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা কর

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা কর। অথবা, বাংলাদেশের অর্থনীতির বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা কর। বাংলাদেশে স্বাধীনতা লাভের পূর্বে মূলত পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থা প্রচলিত ছিল। সম্পদের ব্যক্তিগত মালিকানা, বেসরকারি উদ্যোগের পূর্ণ স্বাধীনতাসহ পুঁজিবাদী অর্থনীতির প্রায় সব বৈশিষ্ট্যই বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিদ্যমান ছিল।

এদেশের সম্পদ মুষ্টিমেয় শিল্পপতি ও পুঁজিপতিদের হাতে কেন্দ্রীভূত ছিল। সমাজে ধনী-দরিদ্রের মধ্যে আয়বৈষম্য ছিল প্রকট। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা: স্বাধীনতা লাভের পূর্বে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সম্পদের ব্যক্তিগত মালিকানা, বেসরকারি উদ্যোগের পূর্ণ স্বাধীনতাসহ পুঁজিবাদী অর্থনীতির প্রায় সব বৈশিষ্ট্যই বিদ্যমান থাকায় দেশের অধিকাংশ সম্পদ মুষ্টিমেয় শিল্পপতি ও পুঁজিপতিদের হাতে কেন্দ্রীভূত ছিল।

ফলে সমাজে ধনী-দরিদ্রের আয় বৈষম্য ছিল চরম। স্বাধীনতা লাভের পর তৎকালীন বাংলাদেশ সরকার দেশে সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ১৯৭২ সালের মার্চ মাসে জাতীয়করণ নীতি ঘোষণা করেন। এ নীতি অনুযায়ী মৌলিক শিল্পসমূহ জাতীয়করণ করা হয়। ১৯৭৫ সালে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের ফলে দেশের অর্থব্যবস্থাতে আবারও পরিবর্তন সূচিত হয়।

১৯৮২ সালের নতুন শিল্পনীতিতে রাষ্ট্রায়ত্ত খাত থেকে পর্যায়ক্রমে পুঁজি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বর্তমান বিশ্বের অধিকাংশ দেশে মুক্ত বাজার অর্থনীতি চালু করায় অতি সম্প্রতি বাংলাদেশে বেসরকারি খাতে আরও বেশি সুযোগ-সুবিধা দেয়া হচ্ছে।

অর্থাৎ বর্তমান বিশ্বের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সাথে সংগতি রেখে বাংলাদেশেও মুক্ত বাজার অর্থনীতি অনুসরণ করা হচ্ছে এবং দক্ষ বেরকারি খাত বিকাশের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের অর্থনীতির বৈশিষ্ট্যঃ নিম্নে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য আলোচনা করা হলো:

  1. সরকারি বিনিয়োগঃ জাতীয় নিরাপত্তা এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রয়োজনে সরকার গুরুত্বপূর্ণ শিল্পকারখানা ও ব্যবসা-বাণিজ্যে সরাসরি মূলধন বিনিয়োগ করে সেগুলো সরকারের প্রত্যক্ষ মালিকানাধীন এবং নিয়ন্ত্রণাধীন রেখেছে।
  2. বেসরকারি বিনিয়োগঃ মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পকারখানা এবং অভ্যন্তরীণ ব্যবসাবাণিজ্যগুলো বেসরকারি উদ্যোগে পরিচালিত হচ্ছে। জাতীয় অর্থনীতিতে বেসরকারিমুখী সংস্কারের প্রেক্ষিতে বৈদেশিক বিনিয়োগসহ স্থানীয় অর্থায়ন ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
  3. সম্পদের ব্যক্তিমালিকানাঃ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সম্পদের ব্যক্তিমালিকানা স্বীকৃত। তবে সম্পদের একচেটিয়া মালিকানা রোধকল্পে কৃষি জোত এবং শহরের ভূমির মালিকানার ওপর সরকার ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে। উপস্থিতি : বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মুনাফা অর্জন স্বীকৃত। তবে শুধুমাত্র বেসরকারি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এ মুনাফা 
  4. মুনাফার অধিক প্রযোজ্য: অবশ্য সরকার মুনাফা নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
  5. দাম নির্ধারণ: বাংলাদেশে দ্রব্যের দাম নির্ধারণে বাজার ব্যবস্থার প্রভাব রয়েছে। তবে সরকার রাজস্বনীতি, মুদ্রানীতি, বাণিজ্যনীতি ইত্যাদির মাধ্যমে বাজার ব্যবস্থার ওপর প্রভাব বিস্তার করে থাকে।
  6. অর্থনৈতিক পরিকল্পনা: বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি খাতের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে প্রয়োজনীয় ও বাস্তবধর্মী অর্থনৈতিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এ পরিকল্পনায় সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে কোন খাতে কী পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করা হবে তার নির্দেশ থাকে।
  7. সরকারি ও বেসরকারি খাতের সহাবস্থান: বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সরকারি ও বেসরকারি খাতগুলো পাশাপাশি কাজ করছে। উভয় খাত একে অন্যের সাথে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত না হয়ে বরং একে অন্যের সাথে পরিপূরক হিসেবে কাজ করে।
  8. শ্রমিকের স্বার্থ সংরক্ষণ: বাংলাদেশের অর্থনীতিতে শ্রমিকের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য শ্রমনীতি রয়েছে। শিশু শ্রম রাষ্ট্রীয়ভাবে আইনের মাধ্যমে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তা ছাড়া শ্রমিক সংঘ গঠনের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিও রয়েছে।
  9. সামাজিক নিরাপত্তা: সামাজিক নিরাপত্তার জন্য সরকার সবার জন্য শিক্ষা, মহিলাদের জন্য বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচি এবং বেকার যুবকদের জন্য আত্মকর্মসংস্থানমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। তা ছাড়া বয়স্ক ভাতা, গৃহহীন দরিদ্রদের ঋণপ্রদান প্রভৃতি কর্মসূচিও বাস্তবায়ন করছে।

উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, বর্তমান বিশ্বের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সাথে সংগতি রেখে বাংলাদেশেও বর্তমান বাজার অর্থনীতি অনুসরণ করা হচ্ছে।

আপনার আসলেই দৈনিক শিক্ষা ব্লগর একজন মূল্যবান পাঠক। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা কর এর আর্টিকেলটি সম্পন্ন পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ ধন্যবাদ। এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনার কেমন লেগেছে তা অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।

Next Post Previous Post
🟢 কোন মন্তব্য নেই
এই পোস্ট সম্পর্কে আপনার মন্তব্য জানান

দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন - অন্যথায় আপনার মন্তব্য গ্রহণ করা হবে না।

comment url