উদারনৈতিক গণতন্ত্র বলতে তুমি কী বোঝ

আচ্ছালামু আলাইকুম প্রিয় দর্শক - দৈনিক শিক্ষা ব্লগর পক্ষ থেকে আপনাকে স্বাগতম। আজকে আমি আপনাদের মাঝে উদারনৈতিক গণতন্ত্র বলতে তুমি কী বোঝ নিয়ে আলোচনা করব।

উদারনৈতিক গণতন্ত্র বলতে তুমি কী বোঝ

উদারনৈতিক গণতন্ত্র

সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার অবসান ঘটতে শুরু করলে সামাজিক উৎপাদন ব্যবস্থারও পরিবর্তন ঘটতে শুরু করে। পুরাতন ব্যবস্থা দ্বারা নতুন উৎপাদন পদ্ধতি আর ধরে রাখা সম্ভব ছিল না। এই পরিবর্তনের ধারায় উদীয়মান বুর্জোয়া শ্রেণি বাজার ব্যবস্থার সম্প্রসারণ, রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তন এবং মানবাধিকারের জন্য এক বিপ্লবের সূচনা করে। এই মানবাধিকার-সমন্বিত বিপ্লবের হাত ধরে যে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রবর্তন ঘটে, তাকেই বলা হয় উদারনৈতিক গণতন্ত্র।

উদারনীতির সার্বিক রূপায়ণ তথা চিন্তার সাবলীল বিকাশ ঘটতে শুরু করে সপ্তদশ শতাব্দী থেকে। ইংল্যান্ডের গৌরবময় বিপ্লব (1688 খ্রি.)-কে এর একটি দিকচিহ্ন হিসেবে ধরা যায়। নবজাগরণ ও ধর্মসংস্কার আন্দোলনের বিজয়-উদারনীতিবাদকে শক্তি অর্জনে সাহায্য করেছিল।

এ ছাড়া ইংল্যান্ড তথা ইউরোপে শিল্পবিপ্লবের অগ্রগতি মানুষের চিন্তার জগতে যে জোয়ার নিয়ে আসে, তার ফলেও উদারনীতিবাদের অগ্রগমনের পথ সহজ হয়। কারণ, শিল্পবিপ্লবের ফলে বুর্জোয়া শ্রেণি সকল ক্ষেত্রেই ক্ষমতা অর্জনে সচেষ্ট হবার জন্য উদগ্রীব হয়।

দুটি ঐতিহাসিক বিষয় উদারনৈতিক গণতন্ত্রের ধারণাকে আরও সংহত করতে সাহায্য করে। এগুলি হল- [1] 1776 সালে আমেরিকার স্বাধীনতা ঘোষণা এবং [2] 1789 সালে ফরাসি মানবাধিকার-সংক্রান্ত ঘোষণা। আমেরিকার বিপ্লবী ও সংবিধানবিদ (constitutionalist) জেফারসন ও ম্যাডিসন প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তিতে (Institutional basis) উদারনৈতিক গণতন্ত্রের বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলেন।

উদারনৈতিক গণতন্ত্রের ভিত্তি জনসম্মতির ওপর প্রতিষ্ঠিত এবং এটি জনগণের নিকট দায়িত্বশীল একটি সরকার প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী। উদারনৈতিক গণতন্ত্রে একটি নির্বাচিত সরকার থাকে, যে সরকার জনগণের স্বার্থে নিয়োজিত।

উদারনৈতিক গণতন্ত্রে স্বাধীনতা, সাম্য, পরমতসহিষ্ণুতা, সমমর্যাদা প্রভৃতি প্রদান করা হয়। উদারনৈতিক গণতন্ত্রকে একটি 'মনোভাব' ও 'কর্মসূচি' বলে জন ডিউই, কোহেন প্রমুখ রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ উল্লেখ করেন। উদারনৈতিক গণতন্ত্রের কয়েকটি স্বাতন্ত্র্য বর্তমান। যেমন-

[1] জনগণের সার্বভৌমিতা

উদারনৈতিক গণতন্ত্রে সরকার প্রতিষ্ঠিত হয় জনগণের সার্বভৌমিক ভিত্তির ওপর। এর মূল কথা হল জনসম্মতি।

[2] নির্বাচন ব্যবস্থা

উদারনৈতিক গণতন্ত্রে রাজনৈতিক ব্যবস্থা-সংবিধান ও আইনের দ্বারা সংশ্লিষ্ট। এক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধিত্ব বর্তমান।

[3] সংবিধান ও আইন

উদারনৈতিক গণতন্ত্রে রাজনৈতিক ব্যবস্থা-সংবিধান ও আইনের দ্বারা সংশ্লিষ্ট।

[4] বিকেন্দ্রীকৃত ক্ষমতা

উদারনৈতিক গণতন্ত্রে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ ঘটে। বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে সকল স্তরের মানুষকে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়।

[5] দায়িত্বশীলতা

এইরূপ গণতন্ত্রে দায়িত্বশীল শাসনব্যবস্থা বর্তমান। সরকার তার কাজের জন্য জনগণের কাছে দায়িত্বশীল থাকেন।

আপনার আসলেই দৈনিক শিক্ষা ব্লগর একজন মূল্যবান পাঠক। উদারনৈতিক গণতন্ত্র বলতে তুমি কী বোঝ এর আর্টিকেলটি সম্পন্ন পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ ধন্যবাদ। এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনার কেমন লেগেছে তা অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।

Next Post Previous Post
🟢 কোন মন্তব্য নেই
এই পোস্ট সম্পর্কে আপনার মন্তব্য জানান

দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন - অন্যথায় আপনার মন্তব্য গ্রহণ করা হবে না।

comment url