প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব আলোচনা কর

আচ্ছালামু আলাইকুম প্রিয় দর্শক - দৈনিক শিক্ষা ব্লগর পক্ষ থেকে আপনাকে স্বাগতম। আজকে আমি আপনাদের মাঝে প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব আলোচনা কর নিয়ে আলোচনা করব।

প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব আলোচনা কর। অথবা, বাংলাদেশের প্রাকৃতিক গ্যাসের গুরুত্ব আলোচনা কর।

প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব আলোচনা কর। অথবা, বাংলাদেশের প্রাকৃতিক গ্যাসের গুরুত্ব আলোচনা কর।

ভূমিকা: প্রাকৃতিক গ্যাস সম্পদের মধ্যে অন্যতম খনিজ সম্পদ। অর্থনৈতিক গুরুত্বের দিক বিশ্লেষণ করলে এর গুরুত্ব অনস্বীকার্য। গৃহস্থালি হতে শুরু করে বড় বড় শিল্পকারখানায় শক্তি সম্পদ হিসেবে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহৃত হয়।

সে বিচারে প্রাকৃতিক গ্যাস যে-কোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের চাবিকাঠি। প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার ও অর্থনৈতিক গুরুত্বঃ নিচে প্রাকৃতিক গ্যাসের বিবিধ ব্যবহার ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব আলোচনা করা হলো-

  1. কাঁচামাল: প্রাকৃতিক গ্যাস শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কৃত্রিম রাবার, কীটনাশক, সার, কালি, রং, সিমেন্ট, কৃত্রিম তন্তু ইত্যাদি প্রস্তুত করতে গ্যাস কাঁচামাল হিসেবে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
  2. শক্তিসম্পদ: প্রাকৃতিক গ্যাস বিভিন্ন শিল্পকারখানায় শক্তি উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে সিমেন্ট, লোহা ও ইস্পাত এবং রাসায়নিক শিল্পে শক্তি উৎপাদনের জন্য গ্যাসে ব্যবহার সর্বাধিক।
  3. তেল শোধনঃ খনি তেল শোধনের জন্য জ্বালানি হিসেবে তেল শোধনাগারে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করা হয়।
  4. গবেষণাগারে ব্যবহার: বৈজ্ঞানিক গবেষণার কাজে প্রাকৃতিক গ্যাসের প্রয়োজন হয়। কারণ এটি জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হলে ধোঁয়া ও কালি সৃষ্টি হয় না।
  5. বিদ্যুৎ উৎপাদন: বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিদ্যুৎ শক্তির বহুবিধ ব্যবহার অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখে।
  6. নির্মাণকাজ: নির্মাণকাজের জন্য ইটের প্রয়োজন। ইট পোড়াতে পরিবেশ বান্ধব জ্বালানি হিসেবে এটি ব্যবহার হয়।
  7. গাড়ির জ্বালানি: গাড়ির জ্বালানি হিসেবে বর্তমানে রূপান্তরিত গ্যাস ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে ব্যয় কম হচ্ছে এবং বায়ুদূষণ হতে রক্ষা পাচ্ছে।
  8. গৃহস্থালির কাজ: বর্তমানে গৃস্থালির কাজে অর্থাৎ রান্নাবান্নার কাজে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। অন্যান্য জ্বালানি অপক্ষো এর ব্যয় কম এবং ব্যবহার সহজ ও নিরাপদ বিধায় গৃহস্থালির কাজে এর ব্যবহার ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
  9. গৃহ উষ্ণ রাখা: গৃহ উষ্ণ রাখার জন্য শীতপ্রধান দেশসমূহে প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারণ এর ব্যবহা খুবই সহজ, নিরাপদ, ধারাবাহিক এবং ব্যয় অত্যন্ত কম।
  10. গ্যাসবাতির ব্যবহার: গ্যাস দিয়ে আলো জ্বালানো যায়। বর্তমানে গ্যাসবাতির ব্যবহার প্রচলিত হয়েছে। বৈদ্যুতিক বাতির অভাব গ্যাসবাতির সাহায্যে পূরণ করা হয়।
  11. বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন: প্রাকৃতিক গ্যাসকে রূপান্তরিত করে ও পাইপলাইনের সাহায্যে বা সিলিন্ডারের সাহায্যে বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যায়।
  12. কর্মসংস্থান: গ্যাসের কূপ খনন, সংগ্রহ, সংরক্ষণ, সরবরাহ ইত্যাদি কাজে অধিক লোকের প্রয়োজন হয়। তাই প্রাকৃতিক গ্যাস অনেক লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেয়।
  13. জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন: গ্যাস দিয়ে বিভিন্ন প্রকার সামগ্রী তৈরি হয় এবং এসব সামগ্রী দেশে ও বিদেশের বিক্রির মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হয়। ফলে মানুষের জীবনযাত্রার মানও বৃদ্ধি পায়।
  14. পরিবেশ দূষণমুক্ত: কয়লা, খনিজ তেল ইত্যাদি গ্যাস ব্যবহারে ধোঁয়া ও কালির ফলে পরিবেশ দূষিত হয়। এটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহারে কোনো ধোঁয়া বা কালির সৃষ্টি হয় না বিধায় পরিবেশ সর্বদা দূষণমুক্ত থাকে।

উপসংহার: কোনো দেশের অর্থনীতির বিভিন্ন খাতের অগ্রগতির বহুলাংশে প্রাকৃতিক গ্যাসের উপর নির্ভরশীল। বিশেষ করে আমাদের বাংলাদেশের অর্থনীতি প্রাকৃতিক গ্যাসের উপর নির্ভরশীল। তাই যে-কোনো দেশের শিল্পায়ন, নগরায়ণ ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনয়নের জন্য প্রাকৃতিক গ্যাসের ভূমিকা অপরিসীম।

আরো পড়ুনঃ পৃথিবীর খনিজ তেলের উৎপাদন, বণ্টন ও বিশ্ব বাণিজ্য বর্ণনা কর। অথবা, খনিজ সম্পদ বলতে কী বুঝ?

আপনার আসলেই দৈনিক শিক্ষা ব্লগর একজন মূল্যবান পাঠক। প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব আলোচনা কর এর আর্টিকেলটি সম্পন্ন পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ ধন্যবাদ। এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনার কেমন লেগেছে তা অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।

Next Post Previous Post
🟢 কোন মন্তব্য নেই
এই পোস্ট সম্পর্কে আপনার মন্তব্য জানান

দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন - অন্যথায় আপনার মন্তব্য গ্রহণ করা হবে না।

comment url