অধ্যাপক মার্শাল প্রদত্ত অর্থনীতির সংজ্ঞাটি বৈশিষ্ট্যসহ আলোচনা কর

আচ্ছালামু আলাইকুম প্রিয় দর্শক - দৈনিক শিক্ষা ব্লগর পক্ষ থেকে আপনাকে স্বাগতম। আজকে আমি আপনাদের মাঝে অধ্যাপক মার্শাল প্রদত্ত অর্থনীতির সংজ্ঞাটি বৈশিষ্ট্যসহ আলোচনা কর নিয়ে আলোচনা করব।

অধ্যাপক মার্শাল প্রদত্ত অর্থনীতির সংজ্ঞাটি বৈশিষ্ট্যসহ আলোচনা কর।

অধ্যাপক মার্শাল প্রদত্ত অর্থনীতির সংজ্ঞাটি বৈশিষ্ট্যসহ আলোচনা কর অথবা, অর্থনীতি মানবজীবনের সাধারণ কার্যাবলি আলোচনা করে - ব্যাখ্যা কর।

অধ্যাপক আলফ্রেড মার্শাল ঊনবিংশ শতকের শেষভাগে তাঁর সংজ্ঞা দ্বারা অর্থনীতিকে একটি সংকীর্ণ ও নিন্দনীয় পরিবেশ হতে রক্ষা করতে অনেকটা সক্ষম হয়েছেন। ১৮৯০ সালে প্রকাশিত তাঁর 'Principles of Economics' গ্রন্থে তিনি অর্থনীতির সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেছেন, অর্থনীতি মানবজীবনের সাধারণ কার্যাবলি পর্যালোচনা করে।

মানুষের সাধারণ কার্যাবলি হলো অর্থ উপার্জন বা সম্পদ আহরণ ও তার ব্যয় সংক্রান্ত কার্যাবলি, যার মাধ্যমে কল্যাণ সাধিত হয়। অর্থনীতি মানুষের ব্যক্তিগত ও সামাজিক কার্যাবলির সেই অংশই আলোচনা করে। মার্শালের মতে, সম্পদের মজুদ বৃদ্ধির খাতিরে সম্পদ আহরণ করা হয় না, বরং অধিক মানবকল্যাণ সাধনের লক্ষ্যেই সম্পদ আহরণ করা হয়।

এজন্য মার্শাল তাঁর গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, "অর্থনীতি একদিকে সম্পদ নিয়ে আলোচনা করে এবং অন্যদিকে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মানুষ সম্পর্কে আলোচনা করে।" মার্শাল এরূপ সংশোধিত সংজ্ঞার মাধ্যমে অর্থনীতিকে একটি মানবধর্মী এবং কল্যাণমূলক শাস্ত্রে রূপ দেন।

নিম্নে মার্শালের সংজ্ঞাটি বিশ্লেষণ করে বৈশিষ্ট্যসহ আলোচনা করা হলো:
  1. মানবজীবনের সাধারণ কার্যাবলি: মানবজীবনের সাধারণ কার্যাবলি বলতে মার্শাল অর্থ উপার্জন ও অর্থ ব্যয় সংক্রান্ত কাজকে বুঝিয়েছেন। অর্থাৎ আয়-ব্যয় সংক্রান্ত কার্যাবলি অর্থনীতির আওতাভুক্ত।
  2. সামাজিক বিজ্ঞান: অধ্যাপক মার্শাল অর্থনীতিকে একটি সামাজিক বিজ্ঞান হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। তাঁর মতে, অর্থনীতি সমাজবদ্ধ মানুষের অর্থনৈতিক কার্যাবলি নিয়ে আলোচনা করে। সমাজ বহির্ভূত কোনো ব্যক্তির অর্থনৈতিক কার্যাবলি এর আওতাভুক্ত নয়।
  3. মানবকল্যাণ: মার্শাল অধিক সম্পদ আহরণ বা পুঞ্জীভূত করার চেয়ে মানবকল্যাণের প্রতি অধিক গুরুত্বারোপ করেছেন। মানুষের কাজকর্মের মূল উদ্দেশ্য ব্যক্তিগত বা সামাজিক কল্যাণ বৃদ্ধি করা। আর সম্পদ উক্ত কল্যাণ সাধনের বাহন মাত্র।
  4. বস্তুগত দ্রব্য: যেসব দ্রব্য দেখা যায়, ওজন বা পরিমাপ করা যায় এবং যাদের বাহ্যিক মূল্য নির্ণয় করা সম্ভব, সেগুলো বস্তুগত দ্রব্য। মার্শালের মতে, এসব বস্তুগত দ্রব্যসামগ্রী সংগ্রহ ও ব্যবহার অর্থনৈতিক কাজ এবং অবস্তুগত দ্রব্য অর্থনীতির বহির্ভূত।
  5. অর্থের মাধ্যমে পরিমাপযোগ্য: যেসব দ্রব্য অর্থের মাধ্যমে পরিমাপযোগ্য অর্থাৎ যাদের আর্থিক মূল্য আছে, সেগুলোই অর্থনীতির বিবেচ্য বিষয়।

উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বলা যায়, যদিও মার্শালের অর্থনীতির সংজ্ঞাটি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অর্থনীতিবিদ সমালোচনা করেছেন, তথাপি মানবজীবনের সাথে যোগসূত্র স্থাপনের জন্য তাঁর সংজ্ঞাটি যথেষ্ট গুরুত্বের দাবিদার এবং সর্বজনস্বীকৃত।

আপনার আসলেই দৈনিক শিক্ষা ব্লগর একজন মূল্যবান পাঠক। অধ্যাপক মার্শাল প্রদত্ত অর্থনীতির সংজ্ঞাটি বৈশিষ্ট্যসহ আলোচনা কর এর আর্টিকেলটি সম্পন্ন পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ ধন্যবাদ। এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনার কেমন লেগেছে তা অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।

Next Post Previous Post
🟢 কোন মন্তব্য নেই
এই পোস্ট সম্পর্কে আপনার মন্তব্য জানান

দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন - অন্যথায় আপনার মন্তব্য গ্রহণ করা হবে না।

comment url